July 28, 2025, 5:45 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি করেছে।
সোমবার সকালে কুড়িগ্রাম পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ২৯.৯০ সেন্টিমিটার প্রবাহিত হয়, যেখানে বিপদসীমা ধরা হয় ২৯.৩১ সেন্টিমিটার। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের সবক’টি—মোট ৪৪টি স্লুইস গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
এতে করে রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ইতিমধ্যে নদী তীরবর্তী নিচু এলাকায় ফসলের জমি পানিতে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। নদীর চরের বাসিন্দাদের মধ্যে চরম উদ্বেগ বিরাজ করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) রোববার প্রকাশিত এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানায়। পরে পাউবোর কুড়িগ্রাম অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী রকিবুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বুলেটিনে জানানো হয়, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি ক্রমাগত বাড়ছে এবং আগামী ২৪ ঘণ্টায় এই পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এরপর দুদিন তা স্থিতিশীল থাকতে পারে।
পাউবোর কুড়িগ্রাম কন্ট্রোল রুম জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা অববাহিকায় ১৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। রোববার সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে রংপুরের কাউনিয়া গেজ স্টেশনে তিস্তার পানি ১৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে। তখন নদীটি বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
রোববারের পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং এতে করে রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার নিম্নাঞ্চলে প্লাবন দেখা দিতে পারে।
কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রকিবুল হাসান জানান, “তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। সেক্ষেত্রে নদীর আশপাশের নিচু এলাকা, ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি প্লাবিত হতে পারে। তবে এ ধরনের প্লাবন দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা কম।”
এদিকে লালমনিরহাটের কিছু অংশ ইতিমধ্যে পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে হাটিবান্ধার নিচু এলাকা ও ধানখেত ডুবে গেছে। রোববার সন্ধ্যা ৬টায় হাটিবান্ধার তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও ওইসব এলাকার জলাবদ্ধতা শুরু হয়ে যায়।
ডালিয়া ব্যারাজের গেজ রিডার নুরুল ইসলাম জানান, “পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় ব্যারাজের সব ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার রাত থেকেই পানি বাড়ছে।”
পাউবোর লালমনিরহাট অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, “উজানের পানির প্রবাহ ও বৃষ্টির কারণে নদীর পানি বেড়ে নিচু এলাকায় প্রবেশ করেছে। আমরা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি।”
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন, “জেলা প্রশাসন বন্যা পরিস্থিতি নজরে রেখেছে এবং নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।”
Leave a Reply